হাসিনার দোসর চেয়ারম্যানের গ্রেপ্তার দাবি


দেশের আলোচিত বীমা কোম্পানি এনআরবি ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স-এর বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি ও বিদেশে অর্থ পাচারের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। সংস্থাটির চেয়ারম্যান এবং তাঁর স্ত্রী—যারা সরাসরি স্বৈরাচার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত। তাঁদের বিরুদ্ধে দেশ থেকে অর্থ পাচার এবং কোম্পানির কোষাগার থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানির চেয়ারম্যান জি এম কিবরিয়া, যিনি ইতালি আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, তাঁর ক্ষমতা ও রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে সংস্থার অর্থ বিদেশে পাচার করে আসছেন। তাঁর স্ত্রী হোসনে আরা বেগম এনআরবি ইসলামী লাইফের ওভারসিজ এজেন্সির পরিচালক হিসেবে দায়িত্বে থেকে এই দুর্নীতিতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।
তাদের মূল সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিতর্কিত আওয়ামী লীগ অর্থদাতা শাহ জামাল হাওলাদার। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)-এর তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে যে, শাহজামাল অন্তত ৮১ কোটি টাকার আত্মসাৎ ও অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত। এরপরই তাঁর নিয়োগ বাতিল করে কর্তৃপক্ষ।
এনআরবি ইসলামী লাইফের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, যিনি নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, জানান যে এই দুর্নীতির নেপথ্যে মূল পরিকল্পনাকারী কিবরিয়া ও তাঁর স্ত্রী। তারা কোম্পানির বিদেশি শাখার মাধ্যমে কমিশনের নামে অর্থ পাচার করেছেন এবং এর মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লুটে নিয়েছেন।
বিশ্লেষক ও দুর্নীতিবিরোধী মহল মনে করছে, চেয়ারম্যান ও তাঁর স্ত্রীকে আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এনআরবি ইসলামী লাইফে আরও অনেক বড় ধরনের দুর্নীতির কেলেঙ্কারি উন্মোচিত হবে।
এদিকে, চেয়ারম্যান কিবরিয়া বর্তমানে দেশত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। ফলে তাঁর ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি এবং তাদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি তুলেছেন সাধারণ বিনিয়োগকারী, কোম্পানির কিছু প্রাক্তন কর্মী এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
এই ঘটনার পর, কোম্পানির প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা মারাত্মকভাবে নষ্ট হয়েছে এবং বীমা খাতে সরকারের নজরদারির কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও মন্তব্য না করলেও, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ঘটনার পূর্ণ তদন্ত এবং দ্রুত বিচার না হলে ভবিষ্যতে বীমা খাতে আরও বড় ধরনের আস্থার সংকট দেখা দিতে পারে।
