ঢাকা স্টেডিয়াম: ফুটবলের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার প্রত্যাশা


ঢাকা স্টেডিয়াম শুধু একটি খেলার মাঠ নয়, এটি দেশের ক্রীড়ার ইতিহাস ও গৌরবের প্রতীক। পাকিস্তান আমলে থেকেই এ স্টেডিয়াম ছিল টেস্ট ক্রিকেট ও ফুটবলের অন্যতম প্রধান ভেন্যু। বাংলাদেশের ক্রিকেট ও ফুটবল দল এই মাঠেই প্রথম আন্তর্জাতিক সাফল্যের সূচনা করেছিল। সেই স্মৃতিগুলো আজও হৃদয়ে বেঁচে আছে কোটি কোটি ক্রীড়াপ্রেমীর।
কিন্তু সময়ের সাথে সাথে ঢাকা স্টেডিয়ামের ঐতিহ্য আর গৌরবের রেখা ফিকে হয়ে এসেছে। দীর্ঘ ৫৫ মাস খেলা বন্ধ থাকার কারণে এখানে প্রাণশক্তি হারিয়েছে ফুটবল-ক্রিকেটের জনপ্রিয় এই মাঠ। দর্শকহীনতা, অবহেলা ও অবমূল্যায়নের কারণে দেশের ক্রীড়া প্রাণভোমরায় পরিণত এই মাঠ এখন নতুন করে সেজে ওঠার অপেক্ষায়।
এখন সময় এসেছে ঐতিহাসিক ঢাকা স্টেডিয়ামকে তার সোনালি দিনে ফিরিয়ে আনার। সাম্প্রতিক সময়ে ইংলিশ ফুটবলের পরিচিত মুখ হামজা চৌধুরীর মতো মেধাবী খেলোয়াড়রা আমাদের ফুটবলকে নতুন আলো দেখাচ্ছেন। তাদের হাত ধরেই ফুটবল আবার জনমানসে ফিরে আসছে। এর ফলে মাঠে ভিড় জমাচ্ছেন লাখো ক্রীড়াপ্রেমী, ফুটবলের ঐতিহ্য ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশা জাগছে।
ঢাকা স্টেডিয়াম শুধু খেলার মাঠ নয়, এটি আমাদের সাফল্য-ঐতিহ্যের কাঁচা-পাকা সাক্ষ্য। এখানে ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, কুস্তি সহ অনেক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তাই আমাদের দায়িত্ব এই ঐতিহাসিক স্থাপনার যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ, উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণ নিশ্চিত করা। নতুন ছাদ ও ফ্লাডলাইট স্থাপনের মাধ্যমে স্টেডিয়ামকে আধুনিক রূপ দেওয়া অবশ্যই প্রশংসনীয় পদক্ষেপ।
দেশের ক্রীড়ার উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন একটি সুসংগঠিত ক্রীড়া নীতি, যেখানে পুরাতন স্থাপনা ও নতুন প্রতিভার মধ্যে সঠিক সেতুবন্ধন গড়ে তোলা হবে। ফুটবল ও ক্রিকেট যেন ঢাকার এই প্রাণকেন্দ্র থেকে নতুন করে ছড়িয়ে পড়ে দেশের প্রতিটি প্রান্তে। ক্রীড়াপ্রেমীরা যেন এই মাঠে ফিরে পান সেই সময়ের উন্মাদনা ও আনন্দ।
আমাদের প্রত্যাশা, ঢাকা স্টেডিয়াম আবারও সেই গৌরবোজ্জ্বল দিনগুলো ফিরে পাবে; যেখানে ক্রীড়াবিদরা নিজেদের সেরাটা দিয়ে দেশের নাম উজ্জ্বল করতেন এবং দর্শকরা উৎসবমুখর পরিবেশে খেলা উপভোগ করতেন। এটি শুধু একটি মাঠ নয়, এটি দেশের ক্রীড়ার ইতিহাস, গর্ব এবং ভবিষ্যতের আশা।
আসুন, ঐতিহ্যের এই প্রতীককে রক্ষা করি, সমৃদ্ধ করি এবং ফুটবলসহ সকল ক্রীড়ার বিকাশের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তুলি।
