শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫
Natun Kagoj
শিরোনাম
  • নতুন সংবিধানে অবশ্যই জুলাই সনদ সংযুক্ত করতে হবে: নাহিদ ইসলাম সরকারি চাকরি অধ্যাদেশে বড় পরিবর্তন: অপসারণ নয়, বাধ্যতামূলক অবসর খুলনার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ২০৪, কেউ মারা যাননি ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ পাস, বড় জয় ট্রাম্পের অতীতে সনাতনধর্মালম্বী ভাইবোনেরা অনেক নির্যাতিত হয়েছে, কোন বিচার পায়নি : নাহিদ ইসলাম ব্যক্তিগত কারণে ছুটিতে সিমন্স, দ্বিতীয় ওয়ানডেতে থাকছেন না এখন দেশের এই পরিস্থিতিতে কিসের নির্বাচন? - ডা. শফিকুর রহমান কুমিল্লার মিষ্টি মারিয়ার বিতর্কিত উত্থান: কোটি টাকার সম্পদের মালিক! এক লাখের বেশি শিক্ষক নিয়োগে আবেদন প্রক্রিয়া ফের শুরু
  • দুই সপ্তাহে ৯০০ ভূমিকম্প: জাপানের দ্বীপপুঞ্জে আতঙ্কের প্রহর

    দুই সপ্তাহে ৯০০ ভূমিকম্প: জাপানের দ্বীপপুঞ্জে আতঙ্কের প্রহর
    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    জাপানের দক্ষিণাঞ্চলের প্রত্যন্ত ও কম জনবসতিপূর্ণ টোকারা দ্বীপপুঞ্জে টানা দুই সপ্তাহে আঘাত হেনেছে ৯০০টিরও বেশি ভূমিকম্প। ভূমিকম্পের এমন ঘনঘটায় চরম উৎকণ্ঠা ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।

    দেশটির আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, বেশিরভাগ ভূমিকম্প ছিল মাঝারি বা মৃদু মাত্রার, তবে কয়েকটি কম্পনের তীব্রতা ছিল স্পষ্টভাবে অনুভূত হওয়ার মতো।

    টোকারা দ্বীপপুঞ্জ মূল ভূখণ্ড থেকে অনেক দূরে অবস্থিত হলেও, সেখানে থাকা স্বল্পসংখ্যক বাসিন্দা নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। অনেকেই ইতোমধ্যেই দ্বীপ ছেড়ে নিরাপদ স্থানে সরে গেছেন বলে জানা গেছে।

    কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং ভূতাত্ত্বিক কার্যকলাপ বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধানে কাজ করছে।

    এমনকি আতঙ্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে রাতে তারা ঘুমাতেও পারছেন না। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

    জাপানের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিয়েছে, গত ২১ জুন থেকে দ্বীপপুঞ্জের আশপাশের সমুদ্রে ভূমিকম্পজনিত তৎপরতা অত্যন্ত সক্রিয় অবস্থায় রয়েছে। সর্বশেষ বুধবার রিখটার স্কেলে ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে।

    এসব কম্পনে এখনও পর্যন্ত কোনও বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি এবং সুনামিরও আশঙ্কা নেই বলে জানানো হয়েছে। তবে, প্রশাসন স্থানীয়দের প্রস্তুত থাকতে বলেছে যাতে প্রয়োজনে যেন দ্রুত স্থানত্যাগ বা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়া যায়।

    একজন বাসিন্দা স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল এমবিসি-কে বলেন, “ঘুমাতে গেলেই ভয় লাগে, মনে হয় সবসময় কাঁপছে”। চিজুকো আরিকাওয়া নামে অন্য আরেকজন বলেন, “ভূমিকম্পের আগে সমুদ্র থেকে এক অদ্ভুত গর্জনের শব্দ শোনা যায়, বিশেষ করে রাতে। পুরোটা ভৌতিক মনে হয়।”

    আকুসেকিজিমা দ্বীপের বাসিন্দা এই ব্যক্তি আরও বলেন, “সবাই ক্লান্ত, আমরা চাই এগুলো বন্ধ হোক”। ৬০ বছর বয়সী ইসামু সাকামোতো আকুসেকিজিমায় স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। তিনি জানান, “নিচ থেকে প্রথমে একটা ধাক্কা লাগে, তারপর পুরো ঘর দুলে ওঠে। অসুস্থ বোধ করি তখন।”

    বিবিসি বলছে, টোকারা দ্বীপপুঞ্জে মোট ১২টি দ্বীপ রয়েছে, এর মধ্যে সাতটিতে মানুষের বসবাস। মোট জনসংখ্যা মাত্র ৭০০ জনের মতো। অনেক দ্বীপে হাসপাতাল নেই, সবচেয়ে কাছে স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ যেখানে আছে, সেখানে যেতে হলে ছয় ঘণ্টা ফেরিতে চড়ে কাগোশিমা শহরে যেতে হয়।

    এদিকে ভূমিকম্পের কারণে টোকারা দ্বীপপুঞ্জের অনেক গেস্টহাউস নতুন করে পর্যটক নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। কারণ সেগুলো এখন জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে। স্থানীয় প্রশাসন সংবাদমাধ্যমকে অনুরোধ করেছে যেন বাসিন্দাদের অতিরিক্ত ফোন দিয়ে বা সাক্ষাৎকার নিয়ে বিরক্ত না করা হয়।

    ধারাবাহিক এই ভূমিকম্পের মধ্যেই দেশজুড়ে গুজব ছড়িয়েছে, একটি ভয়াবহ ভূমিকম্প আসছে। এই গুজব আরও বাড়িয়েছে ১৯৯৯ সালের একটি জাপানি কমিক বই, যেখানে লেখক রিও তাতসুকি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, এই বছরের ৫ জুলাই ভয়াবহ ভূমিকম্প আসবে।

    এই ভবিষ্যদ্বাণীকে ঘিরে দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে, অনেক পর্যটক তাদের ভ্রমণ বাতিল করছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম।

    বিবিসি বলছে, জাপানে বছরে গড়ে প্রায় ১৫০০ ভূমিকম্প হয়ে থাকে। তবে ২০১১ সালের ভূমিকম্প ও সুনামিতে ১৮ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যাওয়ার পর থেকে সবাই “দ্য বিগ ওয়ান” নামে পরিচিত শতাব্দীর সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা করে আসছে।

    সরকার আশঙ্কা করছে, এই ধরনের একটি ভূমিকম্পে ৩ লক্ষাধিক মানুষ মারা যেতে পারে। এই আশঙ্কার প্রেক্ষাপটে চলতি সপ্তাহেই সরকার নতুন বাধ নির্মাণ, আশ্রয় কেন্দ্র গঠনসহ আরও প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তারা সতর্ক করে বলেছে, “আরও অনেক কিছুই করা বাকি।”


    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    আরও পড়ুন