ইসরায়েলের হুঁশিয়ারি: হুথিদের লক্ষ্য করে সামরিক অভিযানের ইঙ্গিত


মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আবারও চরমে। ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সরাসরি সামরিক প্রতিক্রিয়ার হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। সম্প্রতি রেড সি উপকূলে হুথিদের ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা প্রতিহত করার পর এই হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সামাজিক যেগাাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় কাৎজ বলেন, “ইয়েমেনের পরিণতি হবে তেহরানের মতো। আমরা তেহরানে সাপের মাথায় আঘাত হেনেছি। ইয়েমেনে (সাপের) বাকি দেহে আঘাত করা হবে।”
“ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যে হাত উঠবে, সেই হাত কেটে ফেলা হবে”, এক্সবার্তায় বলেন তিনি।
টানা ১২ দিন সংঘাতের পর গত ২৪ জুন ইরানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি হয় ইসরায়েলের। তারপর গত ৯ দিনে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে একাধিকবার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের অর্ধেক অংশ নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হুথি।
তবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগেই সেসব ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করে ফেলতে পেরেছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। সর্বশেষ গত কাল বুধবার ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে হুথিরা। সেই ক্ষেপণাস্ত্র ইন্টারসেপ্ট বা ধ্বংস করার পর এক্সে এই হুমকি দিয়েছেন কাৎজ।
এক বিবৃতিতে কাৎজ বলেন, “যেমনভাবে ইরান ইসরায়েলের শক্ত প্রতিক্রিয়া দেখেছে, ঠিক তেমনি হুথিদেরও তার মূল্য দিতে হবে। যারা ইসরায়েলের দিকে অস্ত্র তাকাবে, তাদের জবাব দেওয়া হবে পূর্ণ শক্তি দিয়ে।”
ঘটনার পটভূমি
গত কয়েক মাসে ইয়েমেনের হুথি গোষ্ঠী বারবার ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে, বিশেষত গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর। এসব হামলার লক্ষ্য ছিল মূলত রেড সি ও ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চল। বুধবার হুথিদের ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে ধ্বংস করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
হুথিদের প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েলের ওপর হামলার পেছনে তারা যুক্তি দেয়—ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদ হিসেবে তারা এ পদক্ষেপ নিচ্ছে। হুথিদের দাবি, তারা গাজার পাশে থাকার অঙ্গীকার থেকে পিছু হটবে না।
আন্তর্জাতিক উদ্বেগ
ইসরায়েলের এই হুমকির পর পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে উঠেছে। আন্তর্জাতিক মহল আশঙ্কা করছে, ইয়েমেনেও সরাসরি যুদ্ধ জড়িয়ে পড়তে পারে ইসরায়েল, যা মধ্যপ্রাচ্যে আরও অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ বিষয়টি ঘিরে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
নতুন জোটবদ্ধ হামলার শঙ্কা
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর (যেমন হুথি, হিজবুল্লাহ) ক্রমবর্ধমান আগ্রাসী মনোভাব এবং তাতে ইসরায়েলের কঠোর প্রতিক্রিয়া মধ্যপ্রাচ্যে নতুন জোটবদ্ধ সংঘাতের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এই পরিস্থিতি আরও বিস্তৃত আকার ধারণ করতে পারে যদি সরাসরি হুথি ঘাঁটিতে হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
সংক্ষেপে: হুথিদের লাগাতার হামলার প্রেক্ষিতে ইসরায়েল এবার সরাসরি সামরিক অভিযানের হুঁশিয়ারি দিচ্ছে। এর ফলে ইয়েমেন ও সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে সংঘর্ষের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
